Posts

দূর্গাপূজার নবমী, প্রিয়ার সাথে তৃতীয় কথা

Image
২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯, প্রিয়ার সাথে আমার দ্বিতীয়বার কথা হয় জুলাইয়ের ৩১ তারিখে। প্রায় দুমাস হতে চলেছে। একটা দিনের জন্যও তাকে ভুলতে পারিনি। পড়তে বসলে বইয়ের পাতায় তার মুখ ভেসে উঠে। যখন চুপচাপ শুয়ে থাকি মনে হয় সে কানের কাছে এসে ফিস ফিস করে কথা বলছে।  স্বপ্ন দেখি, প্রিয়া আর আমি তার বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পাড়ে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা গল্প করছি। আর সে আলতো করে তার মাথাটা আমার কাঁধে রেখে বসে আছে। দক্ষিণা বাতাসে তার এলো চুলগুলো বার বার আমাকে বলছে, এইতো আমি খুব কাছে আছি! প্রিয়ার চুল অনেক লম্বা, কোমর ছাড়িয়ে। লম্বা চুল আমার ভীষণ পছন্দের। গত দুমাসে বউদি একবার গোবরাতে (উনাদের গ্রামের নাম) গিয়েছে। কিন্তু ছিলেন মাত্র ২ দিন। এই দুদিনে প্রিয়ার সাথে আমার কথা বলবার সুযোগ হয়নি। যখন প্রিয়ার সুযোগ হয়, তখন আমার সুযোগ হয়না। আবার যখন আমার সুযোগ হয় তখন প্রিয়ার সুযোগ হয়না। সে সময় আমার নিজের ফোন ছিলনা। বাড়ির ফোন দিয়ে কথা বলতাম। বাড়ির ফোন হওয়াতে সব সময় সাথে রাখা সম্ভব ছিলনা।  আজ দূর্গাপূজার নবমী চলছে। দাদা বউদি ওখানে গিয়েছে গতকাল। আমি অপেক্ষায় আছি, আমার প্রিয়ার সাথে আমার কথা হবে। তাই বাড়ির ফোনটাও কাছে রেখেছি। বউদি

তার মনে একটুখানি জায়গা পাওয়া, দ্বিতীয় কথা

Image
 ৩১ জুলাই ২০০৯, এর মাঝে বেশ কয়েকদিন কেটে গিয়েছে। প্রিয়ার সাথে কথা বলবার আর সুযোগ মেলেনি। চেষ্টা যে করিনি তা নয়। কিন্তু বউদি তাকে নিয়ে সময় বের করতে পারিনি। আর তাছাড়া, তাদেরকেও দোষারোপ করতে পারছিলাম না। গ্রামে একটা মেয়ে অন্য একজনের ফোন দিয়ে কথা বলবে সেটা খুব কঠিন বিষয় ছিল তখন। আর যদি কোন প্রতিবেশী কিংবা পরিচিত জনের সামনে যদি এ দৃশ্য ধরা পড়ে তবে আর রক্ষা নেই। আবারও মনে করিয়ে দিই, সময়টা ছিল ২০০৯ সাল। গ্রামাঞ্চলে সব জায়গায় তখনও মোবাইল পৌঁছায়নি।  খুব চিন্তা হচ্ছিল আমার। হয়ত আগামী দু'এক দিনের মধ্যে বউদি বাবার বাড়ি থেকে শশুরবাড়ি ফিরে আসবে। যদি এর মধ্যে কথা বলবার সুযোগ না হয় তবে আর কবে সুযোগ হবে কেউ জানেনা।  দুপুরে বউদি ফোন করে বলেছিল আজ বিকালে কথা বলবার সুযোগ হতে পারে। তুমি ফোনটা কাছে রেখো। বিকাল ৪ঃ১০ মিনিটে বউদি ফোন করল। আমার প্রিয়ার সাথে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার কথা হল আমার। আজ খুব শান্ত ভাবে কথা বলছিল ও। গতবারের মত সেই উচ্চস্বর আর নেই। মনে হচ্ছিল আমি ওর অনেক দিনের চেনা। কুশল বিনিময় আর পড়াশোনার বিষয় নিয়ে কথা শেষ হবার পর প্রিয়াকে বললাম, আমিঃ আচ্ছা আমার বিষয়ে কি ভাবলে? প্রিয়াঃ দেখুন যেটা হয়না ত

প্রিয়ার সাথে প্রথম কথা, স্বপ্ন পূরণ

Image
২৬ জুলাই ২০০৯, আজ সারাদিন আমি অনেক এক্সাইটেট। সময় যেন ফুরাচ্ছেনা, অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হচ্ছেনা। আজ আমার প্রিয়ার সাথে আমার প্রথম কথা হবে। ক্ষণিকের দেখায় যে মনে গেঁথে গিয়েছে, যাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত ভেবে চলেছি, যে আমার অংশ হতে চলেছে আজ আমি তার কণ্ঠস্বর শুনতে পাবো। এর চেয়ে খুশির আর কিছুই হতে পারেনা। বাসার মোবাইল হাতে নিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছিলাম। অপেক্ষা বউদির ফোন কলের। জীবনে প্রথম কোন মেয়ের সাথে এভাবে কথা বলতে চলেছি। বাড়িতে সবার মাঝে থেকে কথা বলব সে সাহস আমার তখনও তৈরী হয়নি। বয়স হিসাবে হওয়া উচিতও ছিলনা। অনেক নার্ভাস আমি। কি বলব, কিভাবে শুরু করব সেসব নিয়েই ভাবছিলাম। রাত ৮.৩০ মিনিটে বউদি ফোন করল। এপাশ থেকে আমি স্পষ্ট ভাবে শুনতে পারছিলাম যে, বউদি আমার সাথে প্রিয়াকে কথা বলবার জন্য অনুরোধ করছে। কিন্তু প্রিয়া বলছিল, যাকে চিনিনা তার সাথে কেন কথা বলব!  বউদি এক প্রকার জোর করেই মোবাইল ফোনটা ওর কাছে দিয়ে দিল। ওপাশ থেকে বেশ উঁচু গলায় প্রিয়া বলে উঠল, হ্যালো ! আমি যথেষ্ট ঠান্ডা মাথায় বললাম, প্রিয়া তুমি বলছ আমাকে তুমি চেনোনা, জানোনা। আচ্ছা তুমি যদি আমার সাথে কথা না বলো তবে কিভাবে জানবে বল

ফিরে আসা, তাকে ভাল লাগার কথা জানানো

Image
৪ জুলাই ২০০৯ এর সকাল। যখন পিসেমশায়ের বাড়ি ফিরলাম ঘড়ির কাটা ১১ টায় পৌঁছে গেছে। বউ বরণ হল। সবাই অনেক  খুশি। কিন্তু আমার মাথায় শুধুমাত্র তার চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম নতুন বউদিকে মেয়েটার ব্যাপারে জিগেস করব। রুমে গিয়ে দেখলাম প্রচুর লোক উনাকে ঘিরে আছে। এরকম অবস্থায় কথা বলা সম্ভব না।  বাইরে অপেক্ষা করতে থাকলাম। এক সময় উনি টিউবওয়েল থেকে জল নিতে এলেন। কাছে গিয়ে বললাম, আপনার সাথে কথা আছে। উত্তরে উনি বললেন, কি কথা! বেশী কথা হলে পরে বলো। যেহেতু উনি ব্যাস্ত ছিলেন তাই আর জোর করলাম না। রোজকার মত বিকালে আমার প্রাইভেট টিউশন ছিল, তাই আর অপেক্ষা করা সম্ভব ছিলনা। সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।  বাড়ি ফিরে স্নান এবং দুপুরের খাওয়া শেষ করে বই নিয়ে বসলাম। পড়াশোনার যথেষ্ট চাপ আছে, কিন্তু মোটেও পড়তে ইচ্ছে করছেনা। শুধুই তার কথা মনে পড়ছে। কি নাম সেটাও জানতে পারলাম না। নিজের অস্থিরতা বেড়েই চলল। এভাবে কেটে গেল বেশ কিছুদিন। এর মধ্যে পড়াশোনার চাপে আর বাদুরগাছায় (পিসেমশায়ের বাড়ি) যাওয়া হয়নি, বউদির সাথে কথা বলবার সুযোগও হয়নি। ১১ জুলাই ২০০৯, রাতে বাবা আমাকে ডেকে বললেন, আমি যেন আগামীকাল গিয়ে বউদিকে আমাদের বাড়

দাদার হঠাৎ বিয়ে, তাকে প্রথম দেখা

Image
৩ জুলাই ২০০৯ এর দুপুর! নিজের রুমে ভাল ছাত্রের মত নোট খাতায় চোখ বুলাচ্ছিলাম। ভর দুপুরে এই দৃশ্য কেউ দেখা মাত্রই মন্তব্য করে বসবে, "আহা সোনার টুকরো ছেলে"। কিন্তু আমার জননী ভাল করেই জানেন, পরীক্ষা না এলে ছেলের এই দৃশ্য কোটি টাকা দিয়েও দেখানো সম্ভব না। আমার পড়তে পড়তে বিছানায় শুয়ে পড়া অভ্যাস, বেশীক্ষণ ভদ্রতা দেখাতে পারিনা। শুয়ে শুয়ে আনমনে কি যেন একটা ভাবছিলাম এমন সময় বাদুরগাছা থেকে আড়াই কিলো বাইসাইকেল হাঁকিয়ে বড় পিসেমশায় আমাদের বাড়িতে এসে পৌঁছালেন। নিশ্চয় কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। দেওয়ালের সাথে নিজের বা কানটা যথা সম্ভব চেপে ধরে বাইরের আলোচনা শুনবার চেষ্টা করলাম। মা কাকীমার সাথে পিসেমশায় বলছে, "ভাগ্নের তো হঠাৎ বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। তোমাদের সবাইকেই যেতে হবে। গুছিয়ে নাও তাড়াতাড়ি"।  দাদার বিয়ের কথা চলছে গত কয়েকদিন ধরে। আমাদের বাড়িতে আলোচনা হয়েছে শুনেছি। তবে আমি কখনও আগ্রহ নিয়ে কিছু জিগেস করিনি। বারান্দা থেকে পিসেমশায় আমার নাম উচ্চারণ করতেই আমি দেওয়াল থেকে কানটা সরিয়ে নিলাম। এরপর উনার সামনে গিয়ে একগাল হাসবার ব্যার্থ চেষ্টা করে বললাম, "ভালো আছেন?"। উনি বললেন - দাদার বিয়